ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন? যে ৫ টি কারনে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করবেন।

সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা এখন সবার মাঝে  ছড়িয়ে পড়েছে।  অথচ এক দশক আগে ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি খুজেও পাওয়া যাচ্ছিল না বাংলাদেশে। 

দ্রুত সময়ে মানুষের মুখে ছড়িয়ে এই সম্ভাবনাময় কাজটিকে নিয়ে আমাদের কোতুহলের যেন শেষ নেই। তেমনি কৌতুহলবসত অনেকের জিজ্ঞাসা, ফ্রিল্যান্সিং কেন করব? 

তাই আজকের এই পোস্টটিতে আপনাদের মাঝে তুলে ধরব আপনি ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন?

ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন? কি কি সুজোগ সুবিধা আছে ফ্রিলযান্সিং? কি কি কারনে ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেবেন? এসব জানার জন্য ফ্রিল্যান্সিং কে কিছু মাপকাঠি দিয়ে মেপে দেখতে হবে।  

ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন?




কেন ফ্রিল্যন্সিং করবেন, ফ্রিল্যন্সিং করার কারন
5 best reason to become a freecancer

ফ্রিল্যন্সাং নিয়ে আরো পড়ুন ঃ


১ টাকা

যে কোনো কাজকে প্রোফেশনালি বেছে নেয়ার পিছনে যেসকল মেজর বিষয়ের ওপর নজর দিতে হয় তাদের মধ্যে প্রধান হল টাকা। অর্থাৎ ফ্রিল্যান্সিং করলে টাকা কেমন পাব?

উত্তরে এমন বলব না যে মাসে ১০০০ ডলার আয় করতে পারবেন, আবার পারবেন না যে এমনটাও নয়। টাকার পুরো ব্যপারটা নির্ভর করে আপনার কাজে ও অভিজ্ঞতার ওপর। 

আপনি যত ভালো কাজ করবেন তত ভালো টাকা পাবেন। প্রথমে ভালোভাবে কাজ শিখে, মার্কেটপ্লেসে নেমে, দুই-এক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করলে আপনার মাসিক ইনকাম একজন সরকারি চাকুরীজীবির থেকেও বেশি হবে বলে আমি আশাবাদি। 

আর পড়ুন ঃ



2 কাজের সুজোগ 

ফ্রিল্যন্সিং-এ কাজের সুজোগ কেমন আছে? ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস  গুলোতে উল্ল্যেখিত কাজের তালিকার গুলোর প্রত্যেকটিতে প্রচুর কাজের চাহিদা। বর্তমানে মার্কেটপ্লেসও অনেক বেশি তাই কাজের চাহিদাও অনেক বেশি।  

তবে এমনটা ভেবে নেবেননা  যে মার্কেটপ্লেসে গেলেই কাজ পেয়ে যাব। আপনাকে কপ্লিটিটিভ হতে হবে।  সব জায়গার মত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলোতেও কম্পিটিশন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। তাই আপনার মধ্যে   লড়াই করে কাজ নেয়ার যোগ্যতা থাকা জরুরি। 

এছাড়া সহযে কাজ পাওয়ার জন্য বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোতে একাউন্ট করতে পারেন । বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে প্রতিযোগিতা কিছুটা কম থাকে। 

যে ৫ টি কারনে ফ্রিল্যান্সিং করবেন



3 কাজে স্বাধীনতা 

অন্যান্য সব কাজের থেকে  ফ্রিল্যান্সিং এর গুরুত্ব বেশি হওয়ার একটি অন্যতম কারন হল এর কাজের  স্বাধীনতা। আপনি আপনার ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারবেন। কাজের কোনো নিদ্রিষ্ট সময় নেই। জবের ক্ষেত্রে আপনাকে ৯-৫ পর্যন্ত কাজ করে যেতে হয় কিন্তু ফ্রিল্যন্সিং এ এরকম কোনো ধরাবাধা সময় নাই। আপনি আপনার ইচ্ছামত কাজ করতে পারবেন। 

এরকম বস-ফ্রি লাইফের জন্য ফ্রিল্যন্সিংকে অনেকেই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। যেই ক্যারিয়ারয়ে আপনি  নিজেই নিজের বস। কারো কোনো গালমন্দ সহ্য করতে হবে না। আপনি একজন উদ্দ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করবেন। 

৪ উদ্যোক্তা হওয়ার সুজোগ

ফ্রিল্যন্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিলে,  এই কাজের পাশাপাশি আপনি নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। কোনো নিদ্রিষ্ট বিষয়ের ওপর দক্ষতা  অর্জনের পরে যখন আপনি সেই কাজের ওপর কোনো প্রজেক্ট করেন তখন আপনার অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকে। 

বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্টে কাজ করার ফলে আপনার মধ্যে নানা বিজনেজ আইডিয়া আসতে থাকে। যেগুলোর ওপর পরিশ্রম করে আপনি নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে পাবেন। 

অথবা, আপনি যদি একজন অভিজ্ঞ ফ্রিলান্সার হতে পারেন তাহলে এটা বিষয় নিশ্চিত যে আপনার পরিচিত ক্লায়েন্ট এর সংখ্যা কম হবে না। আপনার এই পরিচিতিও আপনার জন্য একটি বড় সুজোগ। 

ক্লায়েন্ট দের সাথে পরামর্শ করে অথবা তাদের সাহায্যে  আপনি আপনার নিজস্ব একটি আউটসোর্সিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত করে নিতে পারেন। 

বর্তমানে অনেক সফল ফ্রিল্যন্সার এখন আউটসোর্সিং বিজনেস এর সাথে জরিয়ে নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা বানানোর প্রচেষ্টায় ব্যস্ত। 

অথবা আপনি আপনার নিজের ফ্রিল্যান্সিং যার্নি ও অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু বই লিখেও নিজের একটি আলাদা ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করে নিতে পারেন। বর্তমানে অনেকেই এটা করছে।  সফলদের জীবন কাহিনি জানার আগ্রহ অনেক মানুষের  থাকে। 

এতসব কিছু না হলেও আপনি যা শিখেছেন তার ওপর ভিডিও না লাইভ কোর্স বানিয়ে সেল করতে পারেন। 

এসব আইডিয়া আপনাকে একজন উদ্যোক্তা বানানোর জন্য যথেষ্ট, যদি আপনি ডেডিকেটেড হয়ে থাকেন।

আরো পড়ুন ঃ


৫  উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ       

টাকা আর স্বাধীনতা দেখে ক্যারিয়ার হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে বেছে নেয়া অনেকের কাছে বোকামি মনে হতে পারে। অনেকের মনে হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং করে হয়ত সাময়িক কিছু টাকা আয় করা যেতে পারে কিন্তু ভবিষ্যতে এ কাজের দাম কেমন হবে?

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কেমন?  

ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার সন্দেহ থাকিতেই পারে, কিন্তু আপনি যে কাজের ওপর ফ্রিল্যান্সিং করছেন সে কাজের ওপর তো কোনো সন্দেহ থাকার কথা না। 

আমি আর একটু পরিষ্কার করে বলছি, ধরুন আপনি ওয়েব-ডেভলপমেন্ট এ দক্ষ এবং এই বিষয়ের ওপরেই ফ্রিল্যান্সিং করছেন। এখন ধরুন যদি কোনো কারনে আপনার ফ্রিল্যন্সিং একাউন্ট নষ্ট হয়ে গেল,  তাহলে কি আপনার ফ্রিল্যন্সিং ক্যারিয়ার শেষ হবে এবং সেই সাথে ওয়েব-ডেভলপমেন্ট এর দক্ষতাও কি শেষ হয়ে যাবে? যাবে না, বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন্য দেশে বহু কোম্পানিতে ওয়েব ডেভলপার এর জন্য জবের সুযোগ প্রচুর। 

যার মানে ফ্রিল্যান্সিং কোনো অনলাইনে টাকা আয়ের সাইট না যে আজ আছে কাল নেই, ফ্রিল্যান্সিং নিদ্রিষ্ট বিষয়ে  একটি দক্ষতা যা সারা জীবন আপনার সাথে থেকে আপনাকে সহযোগিতা করে যাবে। 

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার থেকে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিভিন্ন্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ কোটি মার্কিন ডলার আয় করছে বাংলাদেশের ফ্রিল্যন্সারেরা।  

ফ্রিল্যন্সারদের জন্য বাংলাদেশ সরকার থেকে ফ্রিল্যন্সার আইডি কার্ড দেয়ার কার্যক্রম চলছে। সরকার থেকে বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে শেখানো হচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ফ্রিল্যাসিং। তাহলে এটা পরিষ্কার যে ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ যথেষ্ট সমৃদ্ধ।                  
Next Post Previous Post