মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম, কিভাবে নগদ একাউন্ট খুলতে হয়?


নগদ একাউন্ট খোলার উপায়


নগদ বাংলাদেশর একটি জনপ্রিয় মোবাইল ব্যংকিং সেবা। এই সেবা বাংলাদেশ ডাক বিভাগের একটি ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন সেবা যা বাংলাদেশ থ্রার্ড ওয়েভ টেকনলোজি লিমিটেড কতৃক পরিচালিত। 

তো নগদ একাউন্ট কিভাবে খুলবেন এবং কিভাবে নগদে ডিজিটাল লেনদেন সেবা গ্রহন করবেন? 

নগদ একাউন্ট খোলা খুবই সহজ। আপনার হাতের মোবাইলটি দিয়েই নগদ একাউন্ট খোলা যাবে। তো কিভাবে খুব সহজে মোবাইলে নগদ একাউন্ট খুলবেন অর্থাৎ নগদ একাউন্ট খোলার সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে জানাবো এই পোস্টে। 

a

মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম। 

মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি দুটি।  

• প্রথমত USSD ডায়াল করে স্মার্টফোন ও এনালগ ফোনেও নগদ একাউন্ট খোলা। 

• দ্বিতীয়ত স্মার্টফোন নগদ অ্যাপ এর মাধ্যমে 

পর্যায়েক্রমে নগদ একাউন্ট খোলার দুটি উপায় নিয়েই আলোচনা হবে আশা করি সাথেই থাকবেন। 

আরো পড়ুন

নগদ একাউন্টের পিন দেখার নিয়ম।  কিভাবে নগদ একাউন্টে পিন পরিবর্তন করতে হয়?

অনলাইনে টাকা  আয় করার সহজ উপায়।  কিভাবে সহজে অনলাইন থেকে টাকা আয় করা যায়?

USSD কোড ডায়াল করে স্মার্টফোন ও এনালগ ফোনে নগদ একাউন্ট খোলা। 

এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত এনালগ ফোনে ( কি-পেড ফোন ) নগদ একাউন্ট খোলা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে নগদ একাউন্ট খোলার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, কোন প্রকার কাগজ ও ছবির ঝামেলা ছাড়াই খুব সহজে একাউন্ট খোলা যায়। তবে স্মার্টফোনেও এই প্রক্রিয়ায় নগদ একাউন্ট খোলা যায়।

কিভাবে USSD কোড ডায়াল করে নগদ একাউন্ট খোলা যায় চলুন দেখে নেয়া যাক।

a

১. আপনার মোবাইলের ডায়াল অপশনে গিয়ে *১৬৭# ডায়াল করুন।  কিপেড মোবাইলের ক্ষেত্রে *১৬৭# বাটনগুলো টাইপ করুন। তারপরে আপনার সামনে একটি পপ-আপ মেনু চলে আসবে। 

২. এই মেনুতে লেখা থাকবে আপনার যাবতীয় তথ্য নগদ আপনার মোবাইল অপারেটরের কাছ থেকে নিবে এতে আপনি রাজি থাকলে নিচে একটি পিন টাইপ করুন।  মনে রাখবেন এই পিন হল আপনার গোপন পিন। পরবর্তীতে আপনার নগদ একাউন্টে লগইন করতে ও টাকা লেনদেন করতে এই পিন প্রয়োজনীয়। 

৩. পিন দিয়ে সেন্ড অপশনে ক্লিক করতেই আপনি নতুন একটি মেনুতে চলে আসবেন। এই মেনুতে আপনাকে পিন কনফার্মেশন করতে হবে অর্থাৎ আগে যেই পিন দিয়েছিলেন সেই পিনটি আবার দিয়ে সেন্ড অপশনে ক্লিক করুন।  হয়ে গেল আপনার নগদ একাউন্ট। 

এবার আপনার নতুন একাউন্টে প্রবেশ করতে পুনরায় *১৬৭# ডায়াল করতে হবে এবং লেনদেনের জন্য আপনার পিন ব্যবহার করতে হবে। এভাবে USSD কোড ডায়াল করে সহজেই নগদ একাউন্ট তৈরি করা যায়। 


কিভাবে নগদ অ্যাপ-এর মাধ্যমে নগদ একাউন্ট খোলা যায়? 

নগদ অ্যাপ-এর মাধ্যমে একাউন্ট খোলার কাজটি সাধারণত স্মার্টফোন করা হয়।  কোনো  এনালগ ফোন বা কি-পেড ফোনে অ্যাপ এর মাধ্যমে একাউন্ট করা যাবে না। 

a

অ্যাপ-এর মাধ্যমে নগদ একাউন্ট করতে কি কি লাগবে?

একটি ভালো স্মার্টফোন যার ফ্রন্ট ক্যামেরা ভালো, আপনার অথবা যার একাউন্ট করবেন তার NID কার্ড, মোবাইল নাম্বার।  


অ্যাপ এর মাধ্যমে নগদ একাউন্ট খুলতে যা যা করতে হবে।

১. প্রথমত আপনার ফোনে নগদ অ্যাপটি ইন্সটল করে নিতে হবে। গুগল প্লে-স্টোরে এক সার্চে পেয়ে যাবেন নগদ অফিশিয়াল অ্যাপ। 

২. অ্যাপ ওপেন করার পরে "রেজিষ্ট্রেশন" অপশনে ক্লিক করুন। ফলে আপনাকে নতুন মেনুতে নিয়ে যাওয়া হবে যেখানে আপনাকে মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। খেয়াল রাখবেন আপনি যে নাম্বারে নগদ একাউন্ট করতে চাচ্ছেন সেই নাম্বারেই এখানে দিবেন। 

৩. আপনাকে সিম অপারেটর সিলেক্ট করতে হবে। সহজ কথায় আপনার সিম কোন কোম্পানির সেটা বাছাই করতে হবে। গ্রামীনফোন না রবি না টেলিটক নাকি বাংলালিংক,, কোন কোম্পানির সিম সেটা বাছাই করে "পরবর্তী ধাপ" অপশনে ক্লিক করুন

৪. এবার আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্র ( NID Card )  ব্যবহার করতে হবে আপনার পরিচয় ভেরিফাই করার জন্য। 

a

NID কার্ডের মত যে আকৃতিটি ছবিতে আপনি দেখছেন তার নিচে কমলা রঙের ক্যামেরার চিহ্নে ক্লিক করেল আপনার ফোনের ক্যামেরা ওপেন হয়ে যাবে। এখন আপনার NID কার্ডের সামনের অংশের ছবি তুলে আপলোড করুন।  একইভাবে নিচে গিয়ে NID কার্ডের পিছনের অংশের ছবি তুলে আপলোড করুন। এবং "পরবর্তী ধাপে" ক্লিক করুন।

৫. আপনার যাবতীয় তথ্য নগদ  কতৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ে  নিবে। আপনার তথ্য যাচাই করে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হোন। 

৬. এই পর্যায়ে ৪ সংখ্যার একটি পিন নাম্বার সেট আপ করুন এবং সামনের ধাপে অগ্রসর হোন। এই ধাপে আগের দেয়া পিন-নাম্বার পুনরায় দিয়ে পিন কনফার্ম করে সামনের ধাপে অগ্রসর হোন।

৭. এখন আপনার মোবাইল নাম্বারটি ভেরিফাই করা হবে। প্রথমে যে মোবাইল নাম্বারটি দিয়েছিলেন সেই নাম্বারে একটি ওটিপি কোড চলে আসবে সেটা জায়গামত বসিয়ে দিন ও "যাচাই করুন" লেখায় ক্লিক করুন। আপনার নগদ একাউন্ট খোলা শেষ। 

এভাবে সহজেই স্মার্টফোনের মাধ্যমে নগদ অ্যাপ দিয়ে নগদ একাউন্ট খোলা যায়। 


নগদ একাউন্টের সুবিধা কি? কেন নগদ একাউন্ট ব্যবহার করব?

সর্বপ্রথম তো নগদে ডিজিটাল লেনদেন করা তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ। কেননা এই এজেন্সি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আওতাভুক্ত। এছাড়াও আরো অনেক সুজোগ - সুবিধা রয়েছে যার কারনে নগদ একাউন্ট ব্যবহার করা সুবিধাজনক।  

a

নগদ একাউন্ট এর সুবিধা সমূহ। 

• দেশের সর্বনিম্ন ক্যাশআউট চার্জ : নগদ দিচ্ছে দেশের সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জে টাকা ক্যাশ-আউটের সুজোগ। অ্যাপ থেকে ক্যাশ-আউটে ৯.৯৯ টাকা প্রতি হাজারে এবং USSD কোড ডায়াল করে ক্যাশ-আউটে ১২.৯৯ টাকা।  ভ্যাট সহ ২ টাকা বেশি হয়ে থাকে

• পে বিল একদম ফ্রি : নগদ একাউন্ট থেকে বিদ্যুৎ,  গ্যাস ও পানি বিল পেমেন্ট করতে কোনো ধরনের চার্জ নেয়া হয় না। নগদে বিল পেমেন্ট ফ্রি। 

• সেন্ড মানি ফ্রি : নগদ একাউন্ট থেকে সেন্ড মানি অর্থাৎ অন্য নগদ একাউন্টে টাকা পাঠানো যায় একদম ফ্রিতে। 

• মোবাইল রিচার্জ ফ্রি : কোনো ধরনের চার্জ বা ভ্যাট ছাড়াই নগদ থেকে যেকোনো অপারেটরে মোবাইল রিচার্জ করা যায় ফ্রিতে। সাথে থাকে দারুন সব রিচার্জ অফার। 

• বেশি মুনাফা : নগদে রয়েছে বেশি মুনাফা লাভের সুযোজ। ডিপিএস স্কিমের মাধ্যমে নগদে বেশি মুনাফা লাভ করা যায়।

এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন অফার ও ক্যম্পেইন। নগদে লেনদেন ঝামেলাহীন ও সহজ। আনলিমিটের টাকা লেনদেন করা যায় দ্রুত সময়ে ও সহজেই। এসব তো গেল নগদ ব্যবহারের সুবিধাজনক দিক এবার জেনে নেই নগদ একাউন্ট ব্যবহারের কিছু শর্তাবলী। 

আরো পড়ুন

নগদ একাউন্টে টাকা দেখার নিয়ম। কিভাবে নগদ একাউন্টের ব্যালেন্স জানা যায়? 

ফ্রিল্যন্সিং কেন করবেন? যে ৫ টি কারনে আপনি ফ্রিল্যন্সিং করবেন?

নগদ একাউন্ট ব্যবহারের শর্তাবলী।

১. নগদ একাউন্ট ব্যবহারকারী লেনদেনের সময় প্রাপকের প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সঠিকভাবে  প্রদান না করার ফলে লেনদেনে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এক্ষেত্রে নগদ কতৃপক্ষ কোনো রকম দায়ভার বহন করবে না।

২. নগদ কতৃপক্ষ গ্রাহকের একাউন্ট ও লেনদেনের সকল তথ্য সর্বোচ্চো গোপনীয়তায় রাখবে, তবে কোনো আইনি আদেশে বা আদালতের আদেশে অথবা নগদের কোনো অনুমোদিত কার্যক্রমে নগদ কতৃপক্ষ গ্রাহকের তথ্যাদি প্রকাশ করার ক্ষমতা রাখে। 

৩. প্রতারনার শিকার হয়ে কোনো লেনদেন করে  টাকা হারালে সেই টাকা নগদ কতৃপক্ষ গ্রাহককে ফেরৎ দিতে রাজি না। 

৪. নগদে লেনদেনের জন্যে প্রতি এক হাজারে ৯.৯৯ টাকা থেকে ১৪.৯০ টাকা পর্যন্ত চার্জ নেয়া হবে।  এই টাকা সম্পুর্ন গ্রাহকে বহন করতে হবে। 

৫. নগদে পর্যাপ্ত ব্যলেন্স এর কমতি থাকলে লেনদেন করা যাবে না। নগদের নির্ধারণ ফি না প্রদান করলে কোনো রকম লেনদেন করা সম্ভব না। 

নগদ বাংলাদেশের অন্যতম একটি ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান।  কিভাবে মোবাইলে নগদ একাউন্ট খোলা যায় ও নগদ একাউন্ট খোলার সঠিক উপায় নিয়ে এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। 


Next Post Previous Post