কুরবানির ইতিহাস ও শিক্ষা | ইসমাইল আঃ এর কুরবানির ইতিহাস

কুরবানির ইতিহাস ও শিক্ষা | ইসমাইল আঃ এর কুরবানির ইতিহাস

কুরবানি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত হওয়ার কারণে আমাদের সকলের কুরবানীর ইতিহাস ও শিক্ষা সম্বন্ধে জানা অত্যন্ত জরুরী। সুতরাং আজকের আর্টিকেলটি আপনারা যারা পড়বেন তারা অবশ্যই কুরবানির ইতিহাস ও শিক্ষা সম্বন্ধে জেনে নিতে পারবেন। তাই চলুন আজকের আর্টিকেলটি আমরা সম্পূর্ণভাবে আপনাদের জন্য তৈরি করছি যাতে আপনারা সকলেই বিষয়গুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে একজন মুমিন হওয়ার সুযোগ পান।

কুরবানির ইতিহাস ও শিক্ষা | ইসমাইল আঃ এর কুরবানির ইতিহাস

কুরবানির ইতিহাস ও শিক্ষা

যখন আমরা তাওহীদের উপর থাকবো তখন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে পরীক্ষা আসবে। আর সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় একজন মুমিনের প্রধান কাজ। আল্লাহ তায়ালা সূরা বাকারাই ১২৪ নাম্বার আয়াতে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন, যখনই ইব্রাহিম আলাই সাল্লামকে মহান আল্লাহ কোন পরীক্ষা দিয়েছেন তখনই তিনি তাতে পাশ করেছেন। 

আর সেই জন্য আল্লাহ তাকে মানবজাতির নেতা করেছিলেন। সুতরাং আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পরীক্ষা আসবে যদি আমরা তাওহীদের উপর থাকি আল্লাহকে বিশ্বাস করি এবং কোরআন সুন্নাহকে বিশ্বাস করি। এবং আমরা যদি পরীক্ষায় পাশ করতে পারি তাহলে মহান আল্লাহ আমাদের সম্মানিত করবেন। 

ইসমাইল আঃ এর কুরবানির ইতিহাস

আল্লাহ হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লামকে অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন। হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম তার পারিবারিক, সামাজিক এবং প্রত্যেকটি স্থানে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু কখনোই তিনি হার মানেননি। আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম কে যেসকল পরীক্ষা দিয়েছেন প্রত্যেকটি পরীক্ষায় আলহামদুলিল্লাহ উত্তীর্ণ হয়েছেন। 

কিন্তু তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আবেগযুক্ত পরীক্ষা ছিল তার ছেলে হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লামকে কুরবানী করা। কোন পিতাই চাইবে না তার সন্তানকে নিজের হাতে হত্যা করতে। কিন্তু হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম আল্লাহ তালাকে এতটাই বিশ্বাস করতেন এবং আল্লাহর প্রতিটা কথাই মেনে চলতেন যে তার নিজের ছেলেকে কুরবানী করার জন্য একবারও ভাবেননি। 

এমনকি তার পুত্র ছোট বয়সেই তার পিতার কথা এবং আল্লাহ তাআলার কথা মাথায় রেখে নিজেকে আল্লাহ তাআলার জন্য কুরবান করতে রাজি হয়েছিল। পৃথিবীতে হয়তো এমন পুত্র কিংবা যুবক খুঁজে পাওয়া যাবে না যে আল্লাহর জন্য নিজেকে কুরবানী করে দিতে পারে।

আসুন আমরা হযরত ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম সম্পর্কে এবং এই কুরবানীর ইতিহাস সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ও গভীরভাবে জেনে নিব। মহান আল্লাহর কাছে হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম বিশেষ সন্তান দাবি করেছিলেন। এবং মহান স্রষ্টা এই দুনিয়ার মালিক আল্লাহ তা'আলা তাকে সুসন্তান দিয়েছিল। 

এবং যখন তার সন্তান হাঁটতে শিখলো বুঝতে শিখলো, তখন হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম তাকে বলেছিল, হে আমার পুত্র আমি স্বপ্ন দেখেছি আমি তোমাকে কুরবানী করছি এ বিষয়ে তোমার কি রায় তা বল। হযরত ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম তখন আরেকটি মুহূর্ত দেরি করল না। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বলেছিলেন আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনি তা পালন করুন। 

হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম বলেছিলেন আপনি আমাকে অবশ্যই ধৈর্যশীল পাবেন ইনশাআল্লাহ। তখন হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লামকে উপর করে শুইয়ে দিল। কেননা হযরত ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম তার পিতাকে বলেছিলেন আপনি যদি আমাকে সোজা করে শুয়ে কুরবানী দেওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে আপনি পারবেন না। কারণ তার চেহারাখানি হযরত ইব্রাহীম আলাই সাল্লাম এর সামনেই ফুটে উঠবে এবং তিনি তার সন্তানকে চোখের সামনে কেমন করে কুরবানী দিবে?

সেজন্যই হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম তার পিতাকে নিজেকে উপুড় করে শুইয়ে দিতে বলেছিল এবং কুরবানি করতে বলেছিল। এরপর আল্লাহতালা তাকে বললেন তুমি তোমার স্বপ্নকে সত্যায়ন করেছ এবং এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ছিল। আর তুমি তোমার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।

আর মহান আল্লাহ তা'আলা এই কুরবানি একদম কেয়ামত পর্যন্ত রেখে দিয়েছেন প্রত্যেকটি উম্মতের জন্য। আর এই জন্যই আমরা প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময় কুরবানী করে থাকি আল্লাহতালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। এবং কুরবানি এই কারণে করা হয় না যে আমরা যেন কুরবানির মাংস খেতে পারি শুধুমাত্র। কুরবানী একটি কারণেই করা হয় যাতে আল্লাহ তাআলা আমাদের উপর সন্তুষ্ট হন। 

মহান আল্লাহ তালাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে আমরা যারা কুরবানী করব তারা অবশ্যই সফলতা অর্জন করব এবং হাশরের ময়দানে অনেক সম্মান অর্জন করব। এই শেষ জামানায় এসে আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আমরা হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম এর মত ত্যাগী হতে পারি। এবং ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম এর মা এর মত যেন ধৈর্যশীল হতে পারি। ইনশাআল্লাহ আমরা তা পারবো এবং মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে আমরা কোরবানি দিব নিজের উদ্দেশ্য নয় কোন ব্যক্তি স্বার্থে নয়। 

আরো পড়ুন:

আমাদের শেষ কথা

আশা করছি আপনারা এই ইতিহাস সম্বন্ধে জেনে উপকৃত হয়েছেন। আর আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য রইল কুরবানীর অগ্রিম শুভেচ্ছা। কিন্তু আমার প্রিয় ভাই দয়া করে ইসলামের দিকে আসুন ঈমানের দিকে আসুন আল্লাহ তালাকে বিশ্বাস করুন এবং সব সময় ইবাদত করার চেষ্টা করুন। আর এই আর্টিকেলটি বন্ধুদের সঙ্গেও শেয়ার করুন যাতে করে তারাও ইসমাইল আঃ এর কুরবানির ইতিহাস সম্বন্ধে জেনে নিতে পারে এবং উপকৃত হতে পারে।
Next Post Previous Post