কেন বাংলায় ব্লগিং করব ? বাংলায় ব্লগিং কি লাভকজনক?

কি কারনে বাংলায় ব্লগিং শুরু করবেন


বাংলা লিখে আয় করুন লক্ষ টাকা করুন।

ব্লগিং করে টাকা আয় করার কথা হয়ত আপনি ইন্টারনেটে বহু জায়গায় শুনে থাকবেন । কিভাবে অনলাইনে টাকা আয় করা যায়? প্রশ্নটি লিখে গুগলে অথবা ইউটিউবে সার্চ করলেই আপনার সামনে টাকা আয়ের  যে সকল  সঠিক উপায়ের তালিকা তুলে ধরা হয় তার মধ্যে ব্লগিং নামটি সহজেই চোখে পরার মত।  

কথা হয় যখন ব্লগিং করে টাকা আয় করার তখন ব্লগিং নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন মনে এসেই যায়। ব্লগিং কিভাবে করব? কোন বিষয়ের ওপর ব্লগ বানাবো? 

এমনি প্রশ্নর মাঝে কমন একটি প্রশ্ন হল, কোন ভাষাতে ব্লগিং শুরু করব? রিজিওনাল ল্যঙ্গুয়েজ নাকি ইংলিশ ল্যঙ্গুয়েজ এ ব্লগ বানানো বেশি লাভজনক? বাংলা নাকি ইংরেজি কোন ভাষাতে ব্লগ বানাবো? কেন বাংলা ভাষায়  ব্লগ বানাবো? 

এসব প্রশ্নের সমাধানের মাধ্যমে, কেন বাংলা ভাষায় লেখালেখি অর্থাৎ ব্লগিং করবেন? সেই বিষয়ে সুস্পস্ট ধরনা দিয়ে বাকি আলোচোনা চালানোর চেস্টা করব।


বাংলা নাকি ইংরেজি কোন ভাষাতে ব্লগিং করবেন?

যখনি ব্লগ শুরুর কথা ভাবছেন তখন এই প্রশ্নটি মনে আসা স্বাভাবিক। এর উত্তরে এক-কথায় বলব শুরুটা অন্ততপক্ষে বাংলায় করুন পরে মন মত ইংরেজি ভাষায় ব্লগ বানাবেন। 

এখন অনেকে বলতে পারেন ভাইয়া আপনি আমাদের পায়ে কুরাল মারছেন, বলছেন বাংলায় ব্লগ শুরু করতে  যখন অন্যরা বলছে ব্লগ শুরু করতে  ইংরেজিতে । 

দেখুন আপনাকে কিছু পয়েন্ট বলি যাতে করে বিষয় টা আপনার কাছে আরো ক্লিয়ার হয়।

১ বাংলা ভাষায় এখনও অনেক বিষয়ে কন্টেন্ট  লেখার সুযোগ রয়েছে ইংরেজির তুলনায় ।

২ যে কোনো বিষয়ের ওপর ইংরেজী ভাষায় ব্লগ শুরু করুন দেখবেন কম্পিটিশন এত বেশি যে ব্লগ র‍্যঙ্কিং-এ আনা অনেক কঠিন কাজ।

৩ ইন্টারনেটে বর্তমানে প্রায় সব বিষয়ের ওপর ইংরেজী ভাষায় বড় বড় ব্লগার নিজের ব্লগকে র‍্যঙ্কিং এ উঠিয়ে রেখেছেন। তাদের পুরোন সেই ব্লগকে টপকিয়ে আপনার ব্লগকে উপরে নিয়ে আশা অনেক অনেক বেশি কঠিন একটা কাজ । অনলাইনে এমন কোন বিষয় বাদ নেই যার ওপর একটি সফল ব্লগ নেই। 

৪ অনেক কিওয়ার্ড রিসার্চের পরেও যদি আপনি কোন লো কম্পিটিটিভ কিওয়ার্ড খুজে পান যেই বিষয়ে একটি ব্লগ বানান যেতে পারে বলে আপনার ধারনা। কিন্তু পরবর্তি দেখলেন সেই লো কম্পিটিটিভ কিওয়ার্ড টির ব্যপারে কোনো অভিজ্ঞতাই আপনার নেই আপনি কিভাবে আর্টিকেল লিখবেন ?

৫ বাংল ভাষায় ভালো ব্লগ ও ভালো কন্টেন্ট এর সংখ্যা তুলনামূলক কম। তাই বাংলায় ব্লগিং শুরু করলে আপনার ব্লগের সফলতার সুজোগ বেশি থাকে ।


কেন বাংলা ভাষায় ব্লগিং শুরু করব ? 

ব্লগিং এর যাত্রা অনেক লম্বা ও অভিজ্ঞতা পূর্ন হয়। এক দিনে ব্লগিং কে জেনে সিদ্ধ্যান্ত নিলেন ব্লগিং করবেন আর একমাস পরেই লক্ষ লক্ষ টাকা আসবে এমনটা ভাবা নিছক বোকামি ছাড়া আর কিছু না।

ব্লগিং এ সফল হতে অনেক লম্বা সময় নিয়ে ধৈর্য নিজে কাজ করতে হয় । অনেক অজানা বিষয় যেমন SEO,কন্টেন্ট মার্কেটিং, আর্টিকেল রাইটিং, ওয়েবপেজ ডিজাইনিং, ওয়ার্ডপ্রেস, শিখে সফলতার দিকে নিজেকে এগিয়ে নিতে হয়। 

এত সব বিষয় আপনি একদিনে শিখতে পারবেন না কখনোই না। একটা লম্বা সময় ব্যায় করতে হবে এসবের পিছনে। এই লম্বা সময়ে আপনাকে কোন প্রকার টাকার চিন্তা না করে কাজ করে যেতে হবে ।

এই সময় টা সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরে ডেডিকেশনের সাথে কাজ করে যেতে। এবার আপনি যদি ইংরেজী ভাষায় ব্লগ শুরু করেন তাহলে ধৈর্য ধারন আপনার জন্য অনেক কঠিন হইয়ে দারাবে । 

প্রাথমিক অবস্থায় যখন ব্লগিং সম্বন্ধে আপনার ধারনা কম থাকে তখন আপনার জন্য প্রয়োজন হবে মোটিভেশনের যেটা আপনি পাবেন ট্রাফিকের মাধ্যমে। ব্লগে ট্রাফিক আসলে ব্লগারদের মনে মোটিভেশন আসে। 

এসব কারনেই বাংলা ভাষায় ব্লগ শুরু করলে সফলতার সুজোগ স্বভাবতই বেশি থাকে। আপনার মনে হতে পারে আমি লেকচার দিচ্ছি। সেই কারনে আপনার সামনে কিছু ফ্যক্ট তুলে ধরব।


বাংলা ভাষায় ব্লগিং করলে কি লাভ হবে ?

প্রথমত বাংলা আপনার মাতৃভাষা, নিজের মুখের ভাষা। বাংলায় কন্টেন্ট লিখতে আপনার যথেষ্ঠ সুবিধা হবে । দিত্বীয়ত বর্তমানে গুগল নতুন ব্লগারদের নিজের রিজিওনাল ল্যঙ্গুয়েজ -এ ব্লগ বানানোর জন্যে বেশি উৎসাহিত করছে । 

আর সবচেয়ে বড় যে ফ্যক্ট তা হল রিজিওনাল ল্যঙ্গুয়েজ ব্লগ বানালে ইংরেজি ব্লগের তুলনায় তারাতারি এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া যায়। একটি ইংরেজি ব্লগের এডসেন্স এপ্রুভাল এর ক্ষেত্রে অনেক বেশি শর্ত থাকে যেমন , ৫- ১০ টি পেজ থাকতে ব্লগে থাকতে হবে, ৩০ টির মত পেজ থাকতে হবেএমন অনেক শর্ত ।বাংলা ব্লগের ক্ষেত্রে এত সব শর্ত থাকে না।


বাংলা ব্লগের ভবিশ্যত কি ?

বাংলা ব্লগের ভবিশ্যত সম্পর্কে একটা কথায় বলা যায় আর তা হল উজ্জ্বল। কেননা আপনি যদি ২০১০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বাংলা ব্লগিং এর অবস্থা খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন তখন বাংলা ভাষায় কোনো ব্লগের জন্য এডসেন্স এপ্রুভাল দেয়া হচ্ছিল না । 

২০১৭ থেকে বর্তমানে বাংলা ব্লগে এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়া বেশ সহজ হয়ে গেছে । এই সময়ে বাংলা ভাষায় ব্লগের সংখ্যা ও পাঠক এর সংখ্যাও বেড়েছে কয়েকগুনে আর ভবিশ্যতে এ সংখ্যা বাড়তেই থাকবেই।

কোরা এর নাম তো নিশ্চয়ই শুনেছেন? প্রশ্ন-উত্তরের জন্য বিখ্যাত একটি ফোরাম, যেকোনো প্রশ্ন লখে গুগলে সার্চ করলে এই ওয়েবসাইটি  প্রথম অথবা দিত্বীয়ত পেজের মধ্যে পেয়ে যাবেন। অবশ্যয়ই সাইটি একটি ইংরেজি ভাষায় বিল্ড করা সাইট ।

সম্প্রতি (২০১৮ সালে ) কোরার বাংলা ভার্সন লঞ্চ করা হয় যাতে বাংলা ভাষাভাষি ভিজিটরের সংখ্যা দেখলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন । 

আগে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট যেগুলো বাংলাদেশে চালু আছে,  তারা কোনো প্রকারের এফিলিয়েট সিস্টেম এর মাধ্যমে নিজের পন্য মার্কেটিং করত না ।কিন্তু বর্তমানে যে কোন ই-কমার্সের এফিলিয়েট সিস্টেম আপনি সহজেই পেয়ে যাবেন। এসব তথ্য জানিয়ে দেয় বাংলা ব্লগারদের জন্য সামনে সুন্দর একটি ভবিশ্যত অপেক্ষা করছে । 

এতসব তথ্য আপনার সামনে তুলে ধারার উদ্দেশ্য কিন্তু ইংরেজি ব্লগকে ছোটো করে দেখা না বরং এটা জানিয়ে দেয়া যে ব্লগিং শুরুর আগে বাংলা ভাষায় ব্লগিং নিয়েও আপনি একটু ভাবুন ।

ইংরেজি ভাষায় ব্লগ তার নিজের জায়গায় থাকবে এই পজিশন থেকে কেও তাকে সরাতে পারবে না । ইংরেজি ভাষায় ট্রাফিকের সংখ্যা বেশি, ইনকামও বেশি তাই ইংরেজি ব্লগের জায়গাটা আলাদা। আপনার যোগ্যতা থাকলে আপনি আপনি ইংরেজি ব্লগিং বেছে বিতে পারেন ।  


আমি আপনাকে বোঝাতে চেস্টা করছি প্রাথমিক অবস্থায় আপনি বাংলা ভাষায় ব্লগিং শুরু করলে আপনার সফলতার ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগটা বেশি থাকে ।  পরর্তিতে আপনি ইচ্ছামত ইংরেজই ভাষায় ব্লগিং শুরু করতে পারেন যখন  আপনার ব্লগিং সম্পর্কে যথেষ্ঠ অভিজ্ঞতা হয়ে যাবে। 


Next Post Previous Post