প্রোটিন জাতীয় খাবার তালিকা

আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় প্রোটিন একটি পরিচিত নাম। মানব দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে প্রোটিন আমিষ অন্যতম। দেহের বৃদ্ধি সাধনে ও নিত্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদনে প্রোটিন বা আমিষ একটি অদ্বিতীয় পুষ্টি উপাদান। 

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দেহে দৈনিক হারে প্রোটিনের চাহিদা থাকে আর তা হল, দেহের প্রতি কেজি ওজনের জন্যে 0.8 গ্রাম প্রোটিন দৈনিক। 

সুতরাং, আপনার দেহের ওজন যদি ৬০ কেজি হয় তাহলে আপনার জন্যে দৈনিক প্রয়োজনীয় প্রোটিন হবে, 48 গ্রাম। অর্থাৎ আপনাকে দৈনিক ৪৮ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করতেই হবে। 


আমিষ জাতীয় খাবার এর তালিকা

এই আর্টিকেল আমি আপনাদের এমন ১০ টি খাবারের সম্বন্ধে জানতে চলেছি যাতে পূর্ন মাত্রায় প্রোটিন পাবেন এবং আপনার দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন। 

সুতরাং আপনি যদি প্রোটিন জাতীয় খাবারের তালিকার সন্ধানে পুরো ইন্টারনেট তন্ন তন্ন করছেন তাহলে আপনার জন্যে উপযুক্ত সমাধান হল এই আর্টিকেলটা। আশা করি আপনাদের দেখানো আমিষ জাতীয় খাবারের তালিকা আপনার সাধ্যের মধ্যে থাকবে এবং আপনার দৈনন্দিন আমিষের চাহিদা পূরণ করবে। 


প্রোটিন জাতীয় খাবারের প্রকারভেদ

একজন মানুষের প্রয়োজনীয় আমিষের চাহিদা দুই ধরনের উৎস থেকে পূরণ করা সম্ভব। এর মধ্যে একটি উৎস হল উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস অন্যটি হল, প্রাণিজ প্রোটিনের উৎস। 

সুতরাং আমিষ হল দুই ধরনের ১. উদ্ভিজ্জ আমিষ; ২. প্রাণিজ আমিষ। যেসকল আমিষ উদ্ভিজ্জ খাদ্য থেকে পাওয়া যায় তাদের উদ্ভিজ্জ আমিষ বলে। আর যেসকল আমিষ প্রাণিজ খাদ্য থেকে পাওয়া যায় তাদের প্রাণিজ আমিষ বলে। যেমন: দুধ, ডিম 

মূলত মানবদেহের বেশিরভাগ আমিষের যোগান প্রাণিজ আমিষ বা প্রাণিজ খাদ্য থেকে আসে। তাই প্রথমে সেরা ৫ টি প্রাণিজ আমিষ জাতীয় খাদ্যের এর তালিকা আপনাদের উপস্থাপন করব।


আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের তালিকা 

মানবদেহের জন্যে অতি প্রয়োজনীয় অমিনো এসিডের যোগান আসে প্রাণিজ আমিষ থেকে। প্রায় সকল এমিনো এসিড পাওয়া যায় প্রাণিজ আমিষ এর মধ্যে। এমনই কিছু উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হল:


১. গরুর, ছাগল, মুরগির মাংস

গরুর মাংস হল সবচেয়ে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। মানবদেহের জন্যে অতি প্রয়োজনীয় প্রায় সকল অমিনো এসিডের পাওয়া যায় গরুর মাংস এর মধ্যে। শুধুমাত্র ১০০ গ্রাম গরুর মাংস খাওয়ার মাধ্যমে একজন মানুষ তার দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারবে তাকে আর অন্য কোনো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার না খেলেও চলবে। 

তাই উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে সবার উপরে মাংসকে স্থান দেওয়া আবশ্যক। সুতরাং আপনাদের জন্যে প্রথম প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের নির্দেশনা হল যেকোনো ধরনের মাংস। 


২. মাছ

যেকোনো ধরনের মাছ উচ্চ প্রোটিনের সর্বশ্রেষ্ট উৎস। আপনি জেনে অবাক হবেন যে সামুদ্রিক স্যলমন মাছের ১০০ গ্রামে প্রায় ৩৬ গ্রাম এর বেশি প্রোটিন থাকে। এই মাছের তেল হৃদরোগের জন্যে খুবই উপকারী।

এছাড়া মাছ এর মধ্যে যে পরিমাণে ফ্যাট থাকে সেটা মানবদেহের সামান্যতমও ক্ষতি করে না বরং উপকার করে। সুতরাং মাছ আমাদের দেহের প্রোটিন এর চাহিদা পূরণ করতে একটি আদর্শ খাবার। তাই প্রোটিন জাতীয় খাবারের তালিকায় মাছ এর অবস্থান দ্বিতীয়।


৩. ডিম

প্রাণিজ আমিষের মধ্যে অন্যতম প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হল ডিম। ডিম যেহেতু একটি কোষ তাই এর প্রায় ৪০% আমিষ বা এই জাতীয় উপদানে ভরপুর। তাই ডিম হতে পারে একটি সেরা প্রোটিন জাতীয় খাবার। 

বর্তমান বাংলাদেশের বাজারের প্রেক্ষাপটে ডিম এর দাম সকলের সাধ্যের মধ্যেই। তাই যে কোনো ডিম কিনে খাওয়ার মাধ্যমে দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। 


৪. দুধ বা দুধজাতীয় খাদ্য

দুধ যেহেতু সরাসরি গরু, মহিষ কিংবা ছাগল এর সাথে জড়িত তাই এই খাবার প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস গুলোর মধ্যে একটি। দুধ খাওয়ার মাধ্যমে আপনি শরীরের দৈনিক প্রোটিন জাতীয় খাবারের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন। 

এছাড়া দুধে রয়েছে ফ্যাট, লাক্টিক এসিড ও ক্যালসিয়াম এর মত গুরুত্বপূর্ন সকল পুষ্টি উপাদান যা মানুষের দেহের জন্যে খুবই খুবই প্রয়োজনীয়। 

নিয়মিত দুধ খাওয়ার মাধ্যমে প্রোটনের চাহিদা পূরণ হয়ে শরীরী গঠনের পাশাপাশি দেহের হার আরো বেশি মজবুত হয় এবং শরীরকে দেয় দীর্ঘস্থায়ী শক্তি। 


৫. শুটকি মাছ

শুটকি মাছ আমিষ ও ভিটামিন ডি এর একটি ভান্ডার। শুটকি মাছ থাকে আয়োডিন যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আলু, কচু, কুমড়া কিংবা করলা এর সাথে শুটকি মাছ রান্না করলে এর পুষ্টিগুণ কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

তাই শুটকি মাছ হতে পারে আপনার আমিষ জাতীয় খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। 




Next Post Previous Post